শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০১:২২ পূর্বাহ্ন

ডিবির ৭ সদস্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবে এমন ঘৃণিত কর্ম করেছে : আদালত

বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা সাদা পোষাকে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাটি অত্যন্ত ঘৃণিত বলে মন্তব্য করেছে আদালত।

এ সংক্রান্ত মামলার রায় ঘোষণাকালে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এমন্ত মন্তব্য করেন বলে নিশ্চিত করেছে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেন, “আদালত তাঁর পর্যাবেক্ষণে এ ঘটনায় সাজাপ্রাপ্তদের অনেকের বয়স কম হওয়ায় সর্বোচ্চ শাস্তি দেননি বলে জানিয়েছেন। আদালত বলেছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবে ডিবি’র এ সাত সদস্য এমন ঘৃণিত কর্মে জড়িয়েছে। রাষ্ট্রের এমন একটি সংস্থার সদস্যরা পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন।’

আদালত তাঁর পর্যাবেক্ষণে নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি ফরিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘আদালত রায়ে যে পর্যাবেক্ষণ জানিয়েছেন এতে সাজাপ্রাপ্ত ডিবি সদস্যদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধের অভাব ছিল বলে মন্তব্য করেছেন। আদালত বলেছেন এটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এরূপ প্রতিটি সংস্থার সদস্যদের নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান উচিত। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ রূপ কোন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সর্তক থাকার আহবান জানানো হয়।’

বিষয়টি নিয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী গণমাধ্যমে কথা বলতে অপরাগত প্রকাশ করেছেন।

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) জিয়াউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সাড়ে ১০ টা পরে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় ডিবির ৭ সদস্যকে। বেলা ১১টায় রায় পড়া শুরু করেন বিচারক। বেলা ১২টার দিকে রায় ঘোষণা করেন বিচারক। বিচারক ৭ জনকে ৩৬৫ ধারায় ৫ বছর এবং ৩৮৬ ধারায় ৭ বছর কারাদণ্ড দেন। উভয় রায়ে সাজা ১২ বছর হলেও সাজা দুেইটি এক সাথে ভোগ করতে হবে। ফলে সাজা ৭ বছর বলে গন্য হবে।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহরের থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর ১৭ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পান এ ব্যবসায় এ সময় ডিবি পুলিশের সদস্যরা কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে ফেরার পথে চৌকির সেনাসদস্যরা মাইক্রোবাস তল্লাশি পরেন। তাতে ১৭ লাখ টাকা পান। এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকেঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনাসদস্যরা। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদি হয়ে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজমকে আসামী করে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার প্রায় ১০ মাস ২০১৮ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ডিবির সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888